দেব-দেবী

জেনে নিন মা মনসার পূজা পদ্ধতি, পূজার উপকরণ ও মন্ত্র

বাংলার এক আদি দেবী মা মনসা। দুই বাংলাতেই মা মনসার রয়েছে ভীষণ জনপ্রিয়তা। সর্পের দেবী হিসেবে পরিচিত মা মনসার পূজা করলে সর্পভীতি দূর তো হয়ই, একই সাথে মায়ের কৃপায় জীবনে আসে অপার শান্তি। 

মঙ্গলকাব্য থেকে জানা যায় মা মনসা হলেন ভগবান শিবের মানস কন্যা, নাগরাজ বাসুকীর ভগিনী। দেবী ভাগবত পুরাণে মা মনসাকে কশ্যপ মুনির কন্যা বলা হয়েছে। মা মনসার জন্ম পদ্মপাতায় বলে তারা আরেক নাম পদ্মাবতী। তার স্বামীর নাম জগৎকারু মুনি। তাদের একমাত্র পুত্রের নাম আস্তিক। তবে সর্পের দেবী হিসেবে মা মনসা যুগ যুগ ধরে ভক্তকূলের আরাধ্য হয়ে এসেছেন।

আগামীকাল (১৭ আগস্ট) মা মনসার পূজা। শ্রাবণ মাসের শেষ দিনে মা মনসার পূজা পালিত হয়। চলুন জেনে নিই মা মনসার পূজা পদ্ধতি, পূজার উপকরণ ও বিশুদ্ধ মন্ত্র।

মা মনসা পূজা পদ্ধতি

অধিকাংশ ক্ষেত্রে, প্রতিমায় মনসা পূজা করা হয় না। মনসা পূজিতা হন স্নুহী বা সীজ বৃক্ষের ডালে অথবা বিশেষভাবে সর্পচিত্রিত ঘট বা ঝাঁপিতে। যদিও কোথাও কোথাও মনসা মূর্তিরও পূজা হয়। বিশেষ করে বাংলার গ্রামে গ্রামে মনসা পূজা বহুল প্রচলিত। এই অঞ্চলে মনসার মন্দিরও দেখা যায়।

বর্ষাকালে সাপেদের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে বলে এই সময়ই মনসা পূজা প্রচলিত। শ্রাবণ মাসে নাগপঞ্চমীতেও মনসার পূজা করা হয়। বাঙালি মেয়েরা এই দিন উপবাস ব্রত করে সাপের গর্তে দুধ ঢালেন।

মনসা পূজার উপকরণ

সিন্দুর, ঘট, মনসাগাছ বা তাহার ডাল, পূজার শাটী ১, মধুপর্কের বাটী ১, মধু, ঘৃত, দধি, তিল, হরিতকী, পুষ্প, দূর্ব্বা, তুলসী, বিল্বপত্র, ধূপ, দীপ, বড় নৈবেদ্য ১, অষ্টনাগের নৈবেদ্য ৮, কুচা নৈবেদ্য ১, শীতলার শাটী ১, আসনাঙ্গুরীয়ক ১, মধুপর্ক ১, প্রতিমা হইলে গর্দ্দভের ধুতি ১, আসনাঙ্গুরীয়ক ২, মধুপর্ক বাটী ২, দধি, মধু, ঘৃত, নথ, লোহা, শাঁখা, সিন্দুরচুবড়ি, রচনা, পুষ্পমাল্য, চন্দ্রমাল্য, হোম করিলে বালি, কাষ্ঠ, সমিধ, হোমের ঘৃত ১ পোয়া, বলি-দ্রব্য, আরতির দ্রব্য, পূর্ণপাত্র, দক্ষিণা।

দেবী মনসার মন্ত্র

দেবীমম্বামহীনাং শশধরবদনাং চারুকান্তিং বদন্যাম্ ।
হংসারূঢ়মুদারামসুললিতবসনাং সর্বদাং সর্বদৈব ।।
স্মেরাস্যাং মণ্ডিতাঙ্গীং কনকমণিগণৈর্মুক্তয়া চ ।
প্রবালৈর্বন্দেহ হং সাষ্টনাগামুরুকু চগলাং ভোগিনীং কামরূপাম্ ।।

সরলার্থঃ সর্প দিগের মাতা, চন্দ্র বদনা, সুন্দর কান্তি বিশিষ্টা, বদন্যা, হংস বাহিনী, উদার স্বভাবা, লোহিত বসনা, সর্বদা সর্ব অভিষ্ট প্রদায়িনী, সহাস্য বদনা, কণকমনি মুক্তা প্রবালাদির অলঙ্কার ধারিনী, অষ্ট নাগ পরিবৃতা, উন্নত কুচ যুগল সম্পন্না, সর্পিণী, ইচ্ছা মাত্র রূপধারিনী দেবীকে বন্দনা করি ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!