আচার ও সংস্কার

জানেন কী হিন্দু বিয়েতে কেন সাত পাকে ঘোরা হয়?

জানেন কী হিন্দু বিয়েতে কেন সাত পাকে ঘোরা হয়?

বিয়ে মানে হল লৌকিক আচার। বাঙালি হিন্দু বিবাহের লৌকিক আচার বহুবিধ। স্থানভেদে আচারে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। এগুলোর সাথে বৈদিক প্রথাগুলোর তেমন যোগসাজস নেই। তবে সাধারণত দুইটি আচারগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। বৈদিক আচার ও লৌকিক আচার। বৈদিক আচারগুলির মধ্যে অবশ্য পালনীয় প্রথাগুলি হল কুশণ্ডিকা, লাজহোম, সপ্তপদী গমন, পাণিগ্রহণ, ধৃতিহোম ও চতুর্থী হোম। অপরদিকে বৈদিক আচারগুলোর সাথে লৌকিক আচারে কোন সংযোগ নেই। এটি অঞ্চলভেদে, বর্ণ কিংবা উপবর্ণভেদে ভিন্নরকম হয়। সেরকমই হিন্দু বিবাহের একটি নিয়ম হচ্ছে সাত পাকে ঘোরা।

আরো পড়ুনঃ কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দির – কি আছে রহস্যময় পাতালঘরে?

আমরা দেখেছি যে বিয়েতে আগুনের কুণ্ডলীর চারপাশে বর-কনে কে ঘুরতে। একে বলা হয় সাত পাকে বাঁধা পড়া। মূলত এর মাধ্যমে অগ্নি দেবতাকে বিয়েতে স্বাক্ষী করা হয়। এবং এই সময় একে-অপরকে সাতটি প্রতিশ্রুতিও দিতে হয়। চলুন প্রতিশ্রুতিগুলো দেখে নেই।

প্রথম প্রতিশ্রুতি

প্রথমে বরকে প্রতিশ্রুতি করতে হয় যে তিনি তার স্ত্রী এবং অনাগত সন্তানদের যত্ন নিবেন।  এর প্রেক্ষিতে কনেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন যে তিনি তার স্বামী এবং পরিবারের যত্ন নিবেন।

দ্বিতীয় প্রতিশ্রুতি

বর প্রতিশ্রুতি করেন যে তিনি তার স্ত্রীকে সকল বৈরী পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করবেন। কনেকে প্রতিশ্রুতি করতে হয় যে তিনি তার স্বামীর সবরকম যন্ত্রণায় সাথে থাকবেন।

তৃতীয় প্রতিশ্রুতি

বর প্রতিশ্রুতি দেন যে তিনি তার পরিবারের জন্য আয় করবেন, এবং তাদের দেখভাল করবেন। একই প্রতিশ্রুতি এবার কনেও করেন।

আরো পড়ুনঃ জেনে নিন কীভাবে তিথি গণনা করা হয়? তিথি পরিচয়

চতুর্থ প্রতিশ্রুতি-

বর প্রতিশ্রুতি করেন যে তিনি তার স্ত্রীর কাছে পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব তুলে দিবেন এবং পরিবার পরিচালনায় স্ত্রীর মতামতকে গুরুত্ব দিবেন। কনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন যে তিনি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন।

Do you know why Hindu marriages go round seven?

পঞ্চম প্রতিশ্রুতি

যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার প্রতিশ্রুতি দেন বর।  স্ত্রী প্রতিশ্রুতি করেন যে তিনি তার স্বামীকে সমর্থন করবেন।

ষষ্ঠ প্রতিশ্রুতি

স্ত্রীর প্রতি সৎ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন স্বামী।  স্ত্রীও স্বামীর প্রতি সৎ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।

সপ্তম প্রতিশ্রুতি

বর এবারে প্রতিশ্রুতি করেন যে তিনি শুধুই স্বামী হিসেবে নয়, একজন বন্ধু হয়ে সারাজীবন স্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন। এ অনুযায়ী স্ত্রীও প্রতিশ্রুতি করেন যে তিনি স্বামীর সঙ্গে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন।

আরো পড়ুনঃ কলকাতা শহরের যে কালী মন্দির পরিচালনা করেন চীনারা!

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!