2021 Festivals Date & TimeFeaturedপূর্ণিমাব্রত ও উপবাস

রাস পূর্ণিমা ২০২১ কবে? রাসযাত্রা কেন পালন করা হয়?

রাস পূর্ণিমা তিথিতেই পালিত হয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাসযাত্রা। তাই এই পূর্ণিমার অন্যরকম তাৎপর্য্য রয়েছে।

রাস পূর্ণিমা ২০২১ পালিত হবে আগামী ২রা অগ্রহায়ণ ১৪২৮, ১৯ শে নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার।

পূর্ণিমার নামতিথি শুরুর তারিখ ও সময়তিথি শেষের তারিখ ও সময়
রাস পূর্ণিমা১৮ নভেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার
ভারতীয় সময়– দুপুর ১২.০০টা
বাংলাদেশ সময়– দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট
১৯ নভেম্বর ২০২১, শুক্রবার
ভারতীয় সময়– দুপুর ২টা ২৬ মিনিট
বাংলাদেশ সময়– দুপুর ২টা ৫৬ মিনিট
রাস পূর্ণিমা ২০২১ সময়সূচী

রাস পূর্ণিমা তিথিতেই পালিত হয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের রাসযাত্রা। তাই এই পূর্ণিমার অন্যরকম তাৎপর্য্য রয়েছে।

রাসযাত্রার ইতিহাস
রাসযাত্রার ইতিহাস জেনে নিন

রাসযাত্রার তাৎপর্য

সনাতন ধর্মালম্বীদের একটি বাৎসরিক উৎসব হলো রাসযাত্রা । রস থেকেই রাস শব্দের উৎপত্তি। রাস হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের সর্বোত্তম মধুর রস। আর লীলা মানে খেলা। অর্থাৎ রাসলীলার মানে শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীরাধা ও তাদের সখী-সাথীদের লীলাখেলা। ভগবান কৃষ্ণের রসপূর্ণ অর্থাৎ তাত্ত্বিক রসের সমৃদ্ধ কথাবস্তুকে রাসযাত্রার মাধ্যমে জীবাত্মার থেকে পরমাত্মায়, দৈনন্দিন জীবনের সুখানুভূতিকে আধ্যাত্মিকতায় এবং কামপ্রবৃত্তিসমূহকে প্রেমাত্মক প্রকৃতিতে রূপ প্রদান করাই হলো রাসযাত্রার তাৎপর্য।

রাসযাত্রার ইতিহাস

বস্ত্রহরণের দিন গোপিনীদের কাছে কৃষ্ণ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, পরবর্তী পূর্ণিমা তিথিতে তিনি রাসলীলা করবেন। শ্রীকৃষ্ণের সুমধুর বংশীধ্বনিতে মুগ্ধ হয়ে গোপিনীবৃন্দ আপনাপন কর্তব্যকর্ম বিসর্জন দিয়ে সংসারের সকল মোহ পরিত্যাগ করে বৃন্দাবনে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং শ্রীকৃষ্ণের চরণে নিজেদের সমর্পন করেছিলেন।

প্রথমে শ্রীকৃষ্ণ গোপিনীদের স্ব-গৃহে ফিরে যেতে অনুরোধ করে বলেন, তাদের সংসার-ধর্ম পালন করা উচিত। কিন্তু গোপিনীরা নিজেদের মতে দৃঢ় ছিলেন। ভগবান ভক্তের অধীন। শ্রীকৃষ্ণ গোপিনীদের দৃঢ়ভক্তি দেখে তাদের মনোকামনা পূরণার্থে রাসলীলা আরম্ভ করেন। কিন্তু যখনই শ্রীকৃষ্ণ তাদের অধীন বলে ভেবে গোপিনীদের মন গর্ব-অহংকারে পূর্ণ হল, তখনই শ্রীকৃষ্ণ গোপিনীদের মধ্য থেকে অন্তর্ধান হয়ে গেলেন। শ্রীকৃষ্ণ যখন রাধাকে নিয়ে উধাও হলেন, তখন গোপিনীবৃন্দ নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন।

ভগবানকে ‘একমাত্র আমার’ বলে ভেবে অহংকারের ফলে শ্রীকৃষ্ণকে তারা হারিয়ে ফেলেছিলেন। যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ ত্রিজগতের পতি, তাই তাকে কোনো মায়া-বন্ধনে বেঁধে রাখা যায় না। তখন গোপিনীবৃন্দ একাগ্রচিত্তে শ্রীকৃষ্ণের স্তুতি করতে শুরু করেন। ভক্তের ভক্তিতে সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান গোপিনীদের মানব জীবনের পরমার্থ বুঝিয়ে দিয়ে তাদের অন্তর পরিশুদ্ধ করেন। গোপিনীদের ইচ্ছাকে তিনি সম্মান জানিয়ে ‘যতজন গোপিনী, ততজন কৃষ্ণ’ হয়ে গোপিনীদের মনের অভিলাষ পূর্ণ করেছিলেন আর গোপীবৃন্দও জাগতিক ক্লেশ থেকে মুক্তিলাভ করেছিলেন। এইভাবে জগতে রাসোৎসবের প্রচলন ঘটে।

নবদ্বীপে রাসযাত্রা

নবদ্বীপের রাস উৎসব

রাস নবদ্বীপের শ্রেষ্ঠ উৎসব। শরৎকালে শারদোৎসবের পরেই শুরু হয় উৎসবের প্রস্তুতির বাড়বাড়ন্ত। কার্তিকী পূর্ণিমায় অনুষ্ঠিত হয় নবদ্বীপের শ্রেষ্ঠ লোকায়ত উৎসব ‘রাস’। এখানকার রাসের প্রধান বিশেষত্ব হচ্ছে মূর্তির বিশালতা। অপরূপ মৃন্ময়ী মূর্তি নির্মাণ করে নানারূপে শক্তি আরাধনাই নবদ্বীপের রাসের প্রধান বৈশিষ্ট্য। নবদ্বীপের রাস শুধুমাত্র উৎসব নয়, ধর্মীয় দ্যোতনার এক ব্যঞ্জনাময় অভিব্যক্তি। জনশ্রুতি প্রচলিত আছে যে, চৈতন্যদেব রাধাকৃষ্ণের রাস উৎসবের সূচনা করেছিলেন নবদ্বীপে।



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!